Skip to main content

করোনা ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তারা শহিদ কি না!

আসসালামু আলাইকুম, হ্যামিলনের বাশিঁওয়ালার (Hamiloner Bashiwala) পক্ষ থেকে  কিছুদিন পরে আবার আপনাদের মাঝে এসে হাজির হলাম। আজকে আমরা একটি অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ বিষয় নিয়ে কথা বলব। বর্তমান পৃথিবীতে মহামারী আকারে যে রোগটি বিস্তার লাভ করছে তার নাম করোনা ভাইরাস।

Hamiloner Bashiwala


এই ভাইরাসের কারনে বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় ৩৭৮৬৭৯ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুবরন করেছেন ১৬৫০৮ জন। প্রায় ১৬৮টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস বর্তমানে।

আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশেও ছড়াইচ্ছে এই মহামারী। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯ জন এবং মৃত্যুবরন করেছেন ৪ জন।

আপনাদের অনেকের মধ্যেই একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করলে সে কি শহিদের মর্যাদা লাভ করবে কি না।

কেননা বর্তমান বিশ্বে মুসলমান প্রধান দেশগুলিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে যারা মৃত্যুবরন করছেন তাদেরকে সঠিকভাবে জানাযা ও দাফন কাফন করা হচ্ছে না।

এ অবস্থায় ইসলাম আমাদের কি বলে সে ব্যাপারে আমাদের পর্যাপ্ত ধারনা থাকতে হবে। কেননা নিজের ধর্ম সর্ম্পকে সঠিক জ্ঞান না থাকলে আমরা যেকোনো ভুল পথে পরিচালিত হতে পারি।

হজরত জাবের বিন আতিক রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ তাআলার পথে মৃত্যুবরণ করা ছাড়াও সাত প্রকার শহীদ রয়েছে। হাদিসটি ইমাম মালেক তাঁর মুয়াত্তায় তুলে ধরেছেন। যারা বিভিন্ন কারণে মৃত্যুবরণ করেন। আর তারা হলো-

  • মহামারীতে মৃত্যুবরণকারী;
  • পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তি;
  • শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃত শহীদ;
  • পেটের রোগে মৃত্যুবরণকারী;
  • আগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকারী;
  • যে ব্যক্তি ধ্বংসাবশেষের নিচে পড়ে মারা যায়,
  • প্রসবকালীন সময়ে মৃত্যুবরণকারী নারী। (মুয়াত্তা মালিক)
তাই আমরা যদি উপরের তালিকাটির দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাচ্ছি যে সবার উপরের দিকে লেখা রয়েছে যে মহামারীতে মৃত্যুবরন করলে তারা শহিদী মর্যাদা লাভ করবে। 

বর্তমান সময়ের যে করোনা ভাইরাস রয়েছে এটিও কিন্তু এক ধরনের মহামারীও বলা যায়। তাই এই মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে কেউ যদি মৃত্যুবরন করে তাহলে আল্লাহ তা’আলা তাকে শহিদী মর্যাদা দিবেন। 

তবে এর মানে কিন্তু এই না যে আপনি আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন যে আপনাকে মহামারী দিয়ে মেরে ফেলার জন্য। বরং আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন যেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনাকে শহিদী মর্যাদা দেয়। 

আর তাছাড়া কোনো ঈমান হারা ব্যক্তি যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করে তাহলে কিন্তু উক্ত ব্যক্তি শহিদী মর্যাদা লাভ করবে না। সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি একজন কাফের হিসেবে মৃত্যুবরন করবেন। আর তাদের আবাসস্থল কেবল জাহান্নাম। 

এছাড়াও আমাদের বিশ্বনবী প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য হাদিসে শাহাদাতের মৃত্যু লাভকারীদের একটি বর্ণনা তুলে ধরেছেন। আর তারা হলো-

  • যে ব্যক্তি তার দ্বীনের (ইসলাম) জন্য নিহত হয়;
  • যে ব্যক্তি তার জীবন রক্ষার্থে নিহত হয়;
  • যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হয়;
  • যে ব্যক্তি তার পরিবার রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ। (মুসলিম, মিশকাত)
তবে ইসলামের জন্য রক্তদানকারী শহীদের সঙ্গে এ সব শহীদের পার্থক্য হলো দুনিয়াতে তাদের গোসল ও জানাযা সবই হবে। কিন্তু এ সব মুমিনগণ পরকালে শহীদের নেকী ও মর্যাদা লাভ করবেন।

এছাড়াও মুসনাদে আহমাদে আরো এসেছে- ‘যে ব্যক্তি অত্যাচারের স্বীকার হয়ে (মজলুম তথা নির্যাতিত অবস্থায়) নিহত হয়, তিনিও শহীদ।’

অর্থাৎ উপরোক্ত বিষয়াবলির মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম যে করোনা ভাইরাস এর দ্বারা মৃত সবাই শহিদী মর্যাদা লাভ করবে। তাই অনেকে যে এক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস এর মৃতদের দাফন, কাফন ও জানাযা নামাজের কাজ করতে চান না, বিষয়টি মোটেও ঠিক না। 

এক্ষেত্রে আপনার নিচের ভিডিওটি দেখলে আশা করছি আপনারা আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন। 



আপনারা বিষয়টি খেয়াল রাখবেন। আল্লাহ তা’আলার কাছে দোয়া করবেন যেন আমরা এই মহামারী থেকে বেচেঁ থাকতে পারি। মহান আল্লাহ তা’আলা যেন আমাদের হেফাজত করেন। আমীন।

Comments

Popular posts from this blog

এক নতুন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা (Hamiloner Bashiwala)

Hamiloner Bashiwala এক নতুন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা (Hamiloner Bashiwala) হ্যামিলনের বাশিঁওয়ালার (Hamiloner Bashiwala) কাহিনী আমরা অনেকেই জানি। জার্মানির হ্যামিলন শহরে একবার এক মারাত্নক সমস্যা তৈরি হল। সে দেশে প্রচুর পরিমানে ইদুঁর এর পরিমাণ বেড়ে গেল। শহরের লোকজন তো বেশ নাজেহাল। বাসার ভিতরে ইদুঁর, বাহিরে ইদুঁর। স্কুলে ইদুঁর, এমনকি খাবারের প্লেটে কিংবা পানির গ্লাসের মধ্যেও ইদুঁর।  এমতাবস্থায় সেই শহরের মেয়র তো বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন। একজন নগরপিতা হিসেবে তার শহরে এ ধরনের কাজ হতে থাকলে তো তার জন্য সেটি চিন্তার বিষয়ই, তাই না? তো এমন একটি অবস্থায় সেই মেয়র সেই শহরের সকল জ্ঞানী-গুণী লোকজনদের নিয়ে একটি আলোচনা সভায় বসলেন।  সবাই সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নিলেন যে যে ব্যক্তি শহরের থেকে এই ইদুঁর দূর করতে পারবে, তাকে পুরষ্কৃত করা হবে।  এমন সময় হঠাৎ সেখানে একজন বাশিঁওয়ালা আসলেন। তিনি এসে মেয়রকে বললেন যে তিনি সমস্যাটি সমাধান করে দিতে পারবেন। তবে বিনিময়ে তাকে ১ হাজার স্বর্ণমুদ্রা প্রদান করতে হবে।  মেয়র সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলেন। তখন সেই বাশিঁওয়ালা তার ঝোলা থেকে একটি

জানুন কোন ১৪টি সময়ে দোয়া করলে সেই দোয়া সাথে সাথেই কবুল হয়

আমাদের  হ্যামিলনের বাশিঁওয়ালা , মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী দোয়া কবুল সর্ম্পকে একটি ওয়াজ করেছিলেন। আমরা অনেকেই জানি না সেই ওয়াজটি সর্ম্পকে। সামনে আসন্ন রমজান মাস, ২০২০। এ সময় আমাদের জানা দরকার কোন কোন সময়ে দোয়া করলে সেই দোয়া সাথে সাথেই কবুল হয়। যাতে আমরা আমাদের সকল সহীহ্ নিয়ত ও দোয়াসমূহ খাস নিয়তে আল্লাহ তা’আলার দরবারে পেশ করতে পারি। মুমিন ঝোপ বুঝে কোপ মারে। সময় মতো কাজ করে। বুদ্ধিমানরা অবশ্যই সুযোগ সন্ধানী হয়ে থাকে। তাই দোয়া কবুলের মুর্হূর্তগুলোতে আমাদের অবশ্যই আমাদের রবের কাছে আমাদের দোয়া প্রার্থনা করা উচিত।  বাজারের লিস্টের মতো আমাদের দোয়ারও লিস্ট করে তারপর আল্লাহ তা’আলার কাছে আমাদের প্রার্থনা করা উচিত।  নেককার স্ত্রী ও সন্তানও দোয়া করে চাওয়ার মতো বিষয়। নবীরা এসব দোয়া করে চেয়ে নিতেন। এমনকি বিশ্বনবী (সা:) বলেছেন, ঘরে লবন না থাকলে সেই লবনটিও আল্লাহ তা’আলার দরবারে চাওয়ার জন্য।  দোয়া কবুলের কিছু নির্দিষ্ট সময় নিচে উল্লেখ করা করা হলো। যথা: রমজানে মাসে সেহারী খাওয়ার সময় দোয়া কবুল হয়। ইফতারি সামনে রেখে দোয়া করলে সেই দোয়া কবুল হয়। আজান ও ইকামতের মাঝখানে দোয়া কবুল

মহামারি করোনা ভাইরাস নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে মিজানুর রহমান আজহারী যা বললেন

গতকালকে ১৭ই মার্চ, ২০২০ এ আমাদের হ্যামিলনের বাশিঁওয়ালা (Hamiloner Bashiwala) , ড. মিজানুর রহমান বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহামারী করোনা ভাইরাস নিয়ে একটি লাইভ পরিচালনা করেছেন। যেখানে তিনি করোনা ভাইরাস এর আদ্যোপ্রান্ত নিয়ে কথা বলেছিলেন। কেন এই মহামারী আমাদের মাঝে আজকে বিরাজ করছে। তিনি বলেন সেখানে এটি বুঝানোর চেষ্টা করেছেন য কেন আসলে আমাদের মাঝে এই ধরনের দুর্যোগ বা মহামারী বিভিন্ন রোগ বালাই হয়ে থাকে। ইসলাম এক্ষেত্রে কি বলে। তিনি সে সময় বেশ কিছু হাদিসের রেফারেন্স টেনে একটি কথা বলেন যে এগুলো হয়ত আমাদের হাতের কামাই। অর্থাৎ এগুলো আমাদের পাপের ফল। আমরা পাপ কাজ করেছি, তাই আল্লাহ তা’আলা আমাদের প্রতি নারাজ হয়ে আমাদেরকে এই ধরনের আযাব আর গজব দিয়েছেন।  অতপর তিনি আরেকটি আরেকটি হাদিসের প্রসঙ্গ টেনে উল্লেখ করেন যে েএটি হতে পারে কেয়ামতের কোনো একটি আলামত। বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) তার একটি হাদিসে কেয়ামতের আগে ৬টি বিষয়ের বর্ণনা করেছেন। তার মধ্যে একটি ছিল এই মহামারী। তাই তিনি সে হাদিসের প্রসঙ্গ টেনে নিয়ে উল্লেখ করেন যে হয়ত েএটি কেয়ামতের কোনো একটি ছোট্ট আলামতও হতে পারে।  আরেকটি হতে পারে যে